চুয়াডাঙ্গায় সরকারি নির্দেশ অমান্য করে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ইচ্ছেমতো বিভিন্ন ফি আদায় করা হচ্ছে। অনুসরণ করা হচ্ছে না সরকারের নির্দেশনা। আবার কোনো কোনো বিদ্যালয় গত বছরের টাকার বোঝাও চাপিয়ে দিচ্ছে অভিভাবকদের ওপর। দিশেহারা হয়ে পড়েছে অভিভাবকগণ। চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে। তবে, বাড়তি টাকা নেয়ার কারণ হিসেবে সরকারি দুই বিদ্যালয়কে দুষেছেন অতিরিক্ত ফি আদায় করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান।
গত ২৪ নভেম্বর-২০২০ তারিখে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর। মহাপরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির শেষ কলামে উল্লেখ করা হয়েছে ২০২১ সালের শুরুতে যদি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এমন কোন ফি যেমন পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানগার, উন্নয়ন ফি গ্রহণ করবে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় পূর্বের ন্যায় সকল ধরনের যৌতিক ফি গ্রহণ করা যাবে। এখানে উল্লেখিত ফি না নেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও চুয়াডাঙ্গা জেলার সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো সরকারের আদেশ অমান্য করে টিউশন ফি ছাড়াও বিভিন্ন নামে শিক্ষার্থীদের নিকট হতে আদায় করছে অতিরিক্ত টাকা।
এলাকা ঘুরে শিক্ষার্থী অভিভাবকদের অভিযোগসূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা শহরে অবস্থিত ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়। যা সরকারি অর্থে পরিচালিত হয়। এছাড়া এ বিদ্যালয় দুটির সভাপতি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক। সেই বিদ্যালয়গুলোতে টিউশন ফি ছাড়াও এককালীন বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে ১ হাজার ২শ টাকা করে। চুয়াডাঙ্গা কালেকটরেট স্কুল এন্ড কলেজ থেকে টিউশন ফি ছাড়াও এককালীন বাবদ অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে ২ হাজার ৫শ টাকা।
এছাড়াও ডিঙ্গেদহ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীদের নিকট হতে সেশন ফি বাবদ ৩৫০ টাকা, ভর্তি বাবদ ১শ’ টাকা এবং ৭ম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির ছাত্রীদের নিকট হতে সেশন ফি ৩৫০ টাকা, ভর্তি ফি বাবদ ২শ’ টাকা হারে গ্রহণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মখলেসুর রহমান জানান, ভর্তির দায়িত্ব সহকারী প্রধান শিক্ষকের ওপর দেয়া হয়েছে তবে টিউশন ফি ছাড়া সকল ধরনের ফি নিতে নিষেধ করা হয়েছে। এ বিয়য়ে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শরিফ উদ্দিন জানান, যেটা করা হচ্ছে প্রধান শিক্ষকের নির্দেশ মত।
অনুরূপভাবে ডিঙ্গেদহ সোহরাওয়ার্দ্দী স্মরণী বিদ্যাপীঠে সেশন ফি ও ভর্তি ফি বাবদ ৫৫০ টাকা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক শাহিনুল ইসলাম বলেন, সেশন ফি না নেয়ার চিঠি আমার কাছে আছে। তবে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় যেখানে জেলা প্রশাসক সভাপতি সেখানেও এ ধরনের ফি জমা নেয়া হচ্ছে। তাছাড়া, চুয়াডাঙ্গা কারেক্টরেট স্কুল, চুয়াডাঙ্গা একাডেমিতেও সেশন ফি নেয়া হচ্ছে বলেই আমরা নিচ্ছি। ওখানে বন্ধ করলে আমরাও নেবো না, যা নেয়া হয়েছে তা ফেরত প্রদান করবো।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিলাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেয়। অনিয়ম পেলে ব্যবস্থা নেবো। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাদিকুর রহমান বলেন, সেশন না নেয়ার জন্য সকল প্রতিষ্ঠানকে নিষেধ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন চিঠিটা একটু ভালো করে পড়ে দেখেন।
এলাকার সচেতন মহল জানিয়েছে, যেখানে সরকারিভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় না করার কথা। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা জেলার সরকারি বিদ্যালয়ে জেলা প্রশাসক সভাপতি সেখানে কিভাবে অতিরিক্ত টাকা আদায় হচ্চে। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক টিউশন ফি ছাড়া অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে শিক্ষার্থী অভিভাবকগণ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More