দর্শনায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

দর্শনা অফিস: মাদককারবারী চক্রের হামলায় আহত ৪ দারোগাসহ ৫জন চিকিৎসা শেষে ফিরেছেন থানায়। গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে ব্যাপক পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সোপর্দ করা হয়েছে আদালতে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে আদালতে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাকী ১৩ আসামিকে গ্রেফতারে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, দর্শনা থানার এসআই মাহমুদুল হাসান মিন্টু গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন দর্শনা পৌর শহরের ঈশ্বরচন্দ্রপুরের সানিরুল ইসলামের ছেলে অভিযুক্ত মাদককারবারী রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ও হাসেম আলীর ছেলে খায়রুলের ফেনসিডিলের একটি বড় চালান ভারত থেকে বহন করে আনা হয়েছে আকন্দবাড়িয়া শেখপাড়ার আ. মান্নানের ছেলে হাকিমের মাধ্যমে। এ রকম সংবাদের ভিত্তিতে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান কাজলের নির্দেশে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৩ টার দিকে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালান এসআই মাহমুদুল হাসান মিন্টু। পুলিশ ঈশ্বরচন্দ্রপুর গোরস্থান সংলগ্ন মাঠ থেকে ইয়াবা নেশার আসর থেকে গ্রেফতার করে হাকিমকে (৩৮)। পুলিশ হাকিমের হাতে হাতকড়া লাগায়। এ সময় মাদককারবারী চক্রের সদস্যরা হামলা চালায় পুলিশের ওপর। এ সুযোগে হাতকড়াসহ পালিয়ে যান হাকিম।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঈশ্বরচন্দ্রপুরের অভিযুক্ত মাদককারবারী খায়রুল, হাসেম, হাকিম ও রাশেদসহ বেশ কয়েকজন পুলিশের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় লাঠিসোটা নিয়ে। এ সময় মাদককারবারীদের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন দর্শনা থানার এসআই মাহমুদুল হাসান মিন্টু, এএসআই মামুন, ইদ্রিস আলী, শাহীন ও কনস্টেবল সোহেল। আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয় দামুড়হুদা চিৎলা হাসপাতালে। গতকাল রোববার চিকিৎসা শেষে আহত পুলিশেরা ফিরেছেন থানায়। এদিকে ঘটনার পরপরই থানার ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজলের নেতৃত্বে ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মাহবুবুর রহমান, সেকেন্ড অফিসার এসআই জাকির হোসেন, মাজহারুল ইসলাম, হারুন অর রশিদ, আহম্মদ আলী বিশ্বাস সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঝটিকা অভিযান চালান ঈশ্বরচন্দ্রপুরে। চিরুনি অভিযানে পুলিশ হাতকড়া নিয়ে পালিয়ে যাওয়া হাকিম, হাসেম আলীর ছেলে খায়রুল ও আশকার আলীর ছেলে হাসেম আলীকে গ্রেফতার করেছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ উদ্ধার করেছে ২৬ বোতল ফেনসিডিল। গ্রেফতারকৃতদের ব্যাপক পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই এসআই মাহমুদুল হক বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত হাকিম, হাসেম ও খায়রুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ১৩ জন পালতক আসামির তালিকায় রয়েছে ঈশ্বরচন্দ্রপুরের আশকার আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম (৩৫), তরিকুল ইসলাম (৪৫), সানিরুল ইসলামের ছেলে রাসেদ (৩১), আবুল হাসেমের স্ত্রী হাজেরা বেগম (৪৫), খায়রুল ইসলামের স্ত্রী পিংকি খাতুন (২৪), শরিফুল ইসলামের স্ত্রী শিল্পী খাতুন (২৮), আবুল হাসেমের মেয়ে কাজলী খাতুন (৩৫), হারান আলী বক্সের ছেলে সানিরুল ইসলাম (৫৮), সানিরুল ইসলামের স্ত্রী আলেয়া বেগম (৫০), হাবিবুর রহমানের ছেলে আরাফাত (৪৫), চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর ইউনিয়নের আকন্দবাড়িয়া ফার্মপাড়ার আ. রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান জনি (৩০), নতুনপাড়ার পচা মিয়ার ছেলে ফেল্টু (৩০), ইসমাইল হোসেনের ছেলে নুহু নবী (৩০)। এ মামলায় অজ্ঞাত নামা রাখা হয়েছে আরো ১০-১২ উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে গতকাল রোববার গ্রেফতারকৃত ৩ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আহম্দ আলী বিশ্বাস গ্রেফতারকৃতদের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছেন বিজ্ঞ আদালতে। থানার ওসি কাজল জানান, গ্রেফতারকৃতদের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মাদকচক্রের বহু হোতার মুখোশ খুলছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে যা গোপন রাখা হচ্ছে। এছাড়া তিনি আরও বলেন, পুলিশের ওপর হামলাকারী মাদককারবারী চক্রের একজনও রক্ষা পাবে না গ্রেফতারের হাত থেকে। এরই মধ্যে প্রত্যেককে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। এদিকে মাদককারবারীচক্র কর্তৃক পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গোটা এলাকায় বইছে সমলোচনার ঝড়। গোটা ঈশ্বরচন্দ্রপুর ও আকন্দবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকার মাদককারবারীদের মধ্যে বিরাজ করছে গ্রেফতার আতঙ্ক।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More