ইসলামের প্রচার-প্রসারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার: ধর্মের নামে জঙ্গিবাদ প্রতিহত করতে আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও অভিভাবকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, মুসলিম অধ্যুষিত দেশ আমাদের। এখানে ইসলামের মূল্যবোধ ও চর্চা যেন ভালোভাবে হয়। ইসলামের মর্মবাণী যেন মানুষের কাছে পৌঁছায়। আমরা দেখেছি এই ধর্মের নাম নিয়ে কীভাবে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হয়েছে। শুধু আমাদের দেশে না, সারা বিশ্বেই কিছু লোক ধর্মের নামে মানুষ খুন করে। মানুষকে খুন করলেই নাকি বেহেস্তে যাওয়া যাবে। এখানে আমার প্রশ্ন, যারা এতদিন মানুষ খুন করেছেন, তারা কে কে বেহেস্তে গেছেন, সেটা কি কেউ বলতে পারবে? বলতে পারবে না। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একযোগে সারা দেশে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ওসমানি মিলনায়তনে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আয়োজনসহ খুলনা, সিলেট ও রংপুরে মডেল মসজিদ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি সারা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ধর্ম হলো ইসলাম ধর্ম। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, কিছু লোক জঙ্গিবাদ তৈরি করে, মানুষ হত্যা করে। তারা বোমা মেরে, খুন-খারাবি করে আমাদের এই পবিত্র ধর্মের নামে বদনাম সৃষ্টি করেছে। যেটা আমাদের ধর্মের পবিত্রতাকেই কেবল নষ্ট করছে না, এর ইমেজটাও নষ্ট হচ্ছে সারা বিশ্বে। গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। এতে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের ইসলাম প্রচারের প্রতিকৃত শীর্ষক ভিডিও চিত্র প্রদর্শিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই মডেল মসজিদের মাধ্যমে ইসলামের বাণী প্রচার হবে। ইসলামের মর্মবাণী দেশ-বিদেশের সব ধর্মের মানুষ উপলব্ধি করতে পারবে, সেই দিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। একমাত্র ইসলাম ধর্মে নারীদের অধিকার দেয়া হয়েছে। নারীদের সমঅধিকার কিন্তু ইসলাম ধর্মই দিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের অনেক পুরনো ঐতিহ্যবাহী মসজিদ আছে, সেগুলো রক্ষা করার চেষ্টা করছি । বায়তুল মোকাররমের মিনার নির্মাণ, এগুলো আমরা করেছি। মসজিদভিত্তিক শিক্ষা আমরা করে দিয়েছি। সেখানে আমরা বিশেষ অনুদান দিচ্ছি। তিনি বলেন, জীবন-মান উন্নয়নে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট করে দিয়েছি। একটা সময় তারা অসুস্থ হয়ে গেলে তাদের আর সাহায্য করার কিছু থাকে না। কাজ করতে চাইলেও পারে না। সেই জন্যই আমি এই ফান্ড গঠন করেছি। আমাদের ইমাম-মুয়াজ্জিনরা যেনো বিশেষ সুবিধা পান। ঋণ নিতে পারেন, অনুদান নিতে পারেন। সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি ছিল না, আমরা স্বীকৃতির ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে দিয়েছি। ইসলাম প্রচার-প্রসারে যা যা করণীয় আমরা সে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। মাদকের বিষয়ে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাদক আজ আমাদের সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে। এর হাত থেকে যেনো মানুষকে মুক্ত করতে পারি সেজন্য সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। এই মসজিদটা সেইভাবেই তৈরি করা হয়েছে। যেখানে সব ধরনের শিক্ষা এবং প্রচার হবে। মানুষের মাঝে সচেতনতা, ধর্ম সম্পর্কে যেনো মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধি পায় সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা এটা করেছি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে হজযাত্রীদের নানা সমস্যা একে একে দূর করা হয়েছে। আমাদের আশকোনা হজ ক্যাম্প রয়েছে। তাদের (হাজিদের) ইমিগ্রেশনের জন্য এয়ারপোর্টের ভেতরে যাওয়ার দরকার নেই। সেখানে বসেই যেন করতে পারে আমরা সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। সৌদি সরকারের সঙ্গে আলাপ করে আমরা সেই অনুমোদনও নিয়েছি। এখানে বসে সবকিছু হয়ে যাবে। তারপর সহজভাবে বিমানে চলে যাবেন। মক্কা-মদিনা শরিফ থেকে আসার সময় যেনো সুবিধা হয়, মক্কা শরিফেও সে ব্যবস্থা করেছি। সরকারপ্রধান বলেন, এখন আর আমাদের বিমান ভাড়া করা লাগে না। নিজেদের বিমানে আমরা হাজিদের পাঠাতে পারি। সভাপতির বক্তব্যে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, মুসলিম বিশ্বের এই প্রথম কোনো দেশের সরকারপ্রধান একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ করছেন। এর আগে কোনো মুসলিম শাসক বা সরকারপ্রধান একসঙ্গে এতগুলো মসজিদ নির্মাণ করেননি। এটি একটি অনন্য এবং যুগান্তকারী ঘটনা। এজন্য দেশের জনগণের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More