ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ১৭ জেলায় ৩৮ জনের প্রাণহানি : তছনছ উপকূলীয় অঞ্চল

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ১৭ জেলায় ৩৮ জনের প্রাণহানি : তছনছ উপকূলীয় অঞ্চল

স্টাফ রিপোর্টার: চট্টগ্রাম ও বরিশাল উপকূলে সোমবার সন্ধ্যায় আছড়ে পড়েছিল ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সেই ঝড়ের ঝাপটা লাগে দেশজুড়ে। ৭৪ কিলোমিটার গতিবেগের সিত্রাং উপকূলজূড়ে তা-ব চালায় মধ্যরাত পর্যন্ত। ভোরে দুর্বল হয়ে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চল পেরিয়ে ভারতের দিকে যায়। তবে পার হওয়ার সময় তছনছ করে দিয়ে যায় উপকূল। অমাবস্যা রাতে ভয়াবহতা টের পাওয়া গেলেও স্পষ্ট হয়নি ক্ষত। ভোরে রৌদ্রোজ্জ্বল আলো ফুটতেই বেরিয়ে আসে রাতের ধ্বংসযজ্ঞের চেহারা। তবে ঝড়ের সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির চিত্র এখনও পাওয়া যায়নি। সোমবার রাতে ৯ জন মারা যাওয়ার খবরের সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার যোগ হয় আরও ২৯ প্রাণ। সব মিলিয়ে সিত্রাং কেড়ে নিয়েছে ৩৮ জীবন। বিধ্বস্ত হয় ঘরবাড়ি, উপড়ে যায় গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি, ভেসে গেছে ঘেরের মাছ, ডুবে ক্ষেতের ফসল। সবচেয়ে বেশি আঘাত আসে কৃষকের ঘামে ভেজা স্বপ্নের ফসলে। আধাপাকা আমনে মই দিয়েছে সিত্রাং।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তাৎক্ষণিক তথ্য বলছে, ৫৮ হাজার ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের ভাষ্য, ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কার চেয়ে কম হয়েছে। ১০ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৯ জন। আক্রান্ত হয়েছে ৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। মৎস্য ঘের ভেসে গেছে এক হাজার। সরকার বলছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে আছে তারা।

এদিকে ঝড়ের কারণে সোমবার সন্ধ্যা থেকে উপকূলের বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। গতকাল দুপুরের পর থেকে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে। এরই মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাসায় ফিরেছেন দুর্গতরা।

পূর্বাভাসে ঘাটতি, আবহাওয়া অধিদপ্তরের ব্যাখ্যা: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে পূর্বাভাস ছিল ১ অক্টোবর। তারপরও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং আবহাওয়া অধিদপ্তরের প্রস্তুতি ছিল নড়বড়ে। পূর্বাভাস, সতর্কবার্তা পৌঁছুনো ও আগাম প্রস্তুতিতে ছিল ঘাটতি। একেক সময় দেয়া হয়েছে একেক বার্তা। প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমানের গতকাল বাংলাদেশে সিত্রাং আঘাত হানার তথ্য নিয়েও শেষ মুহূর্তে তৈরি হয় বিভ্রান্তি। যদিও সোমবার তিনি তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসেন। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যেও ছিল গরমিল। বাংলাদেশের উপকূলে সিত্রাং আঘাত করার সময় নিয়ে আগের করা পূর্বাভাসগুলোও পুরোপুরি মেলেনি।

গতকাল এর ব্যাখ্যাও দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা বলছে, শুরু থেকেই সিত্রাংয়ের আচরণ ছিল এলোমেলো। বারবার পাল্টাতে থাকে গতিপথ। তাই এর গতিবিধি ঠিকমতো বোঝা যায়নি। আসার পথে বৃষ্টি ঝরিয়ে নিজের শক্তি ক্ষয় করেছে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশীদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় হিসেবে গঠিত হওয়ার আগে নিম্নচাপের সময়ই এটি তিন অংশে ভাগ হয়ে যায়। আর বারবার পাল্টেছে গতিপথ। প্রথমে ভারতের উড়িষ্যা, পরে পশ্চিমবঙ্গ এবং শেষে বাংলাদেশের উপকূলমুখী হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরও সোমবার পর্যন্ত একে প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলেছে। তবে আসার পথে এটি প্রবল বৃষ্টি ঝরায়। তাতে এর শক্তিক্ষয় হয়। তাই এটি দ্রুত এসে দ্রুতই চলে যায়। রাত ১টার মধ্যেই উপকূল মোটামুটি পরিস্কার হয়ে যায়। ছয় ঘণ্টার মধ্যে এটি হয়ে পড়ে শক্তিহীন।

বজলুর রশীদ আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ব্যতিক্রমী আচরণের জন্য এটি নির্ণয়ের মডেলগুলোতেও পরিবর্তন হয়েছে বারবার। অনিশ্চিত গতিবিধির কারণেই এর আসার সময় এবং এর আকার সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন হয়ে পড়ছিল। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা এক যুগের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।

১৭ জেলায় ৩৮ প্রাণহানি: গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত দেশের ১৭ জেলায় ৩৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপকূলের সন্দ্বীপ চ্যানেলে বালু তোলার ড্রেজার ডুবে আট শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার রাতে উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের ৩নম্বর জেটি এলাকার পশ্চিমে এ ড্রেজারডুবির ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম নগরের মোহরায় জোয়ারের পানিতে বিদ্যুৎস্পর্শে মোবারক হোসেন নামের এক যুবক ও সীতাকু-ের শিপইয়ার্ডে ভেসে এসেছে তিন মাসের এক শিশুর লাশ।

ভোলায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গাছচাপায় প্রাণ যায় বিবি খাদিজা (৬৮) নামের এক নারীর। চরফ্যাসনে ঘূর্ণিঝড়ের সময় মোটরসাইকেলে করে দু’জন যাওয়ার পথে গাছের ডাল পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. মাইনুদ্দিন (৪৫)। ভোলা সদর উপজেলার চেউয়াখালী গ্রামের মফিজুল ইসলাম (৭০) ঘরচাপায় এবং লালমোহনের ফাতেমাবাদ গ্রামের ফরিদুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়া বেগম (২৫) পানিতে ডুবে মারা যান।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে ঝড়ের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় দুই পুলিশ কনস্টেবল নুরুল ইসলাম ও মো. সোহেল এবং আসামি লালন নিহত হন। ঘরে বৃষ্টির পানি ঢুকে তলিয়ে যাওয়া আইপিএস সরাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে মারা যান টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া পাঞ্জাপাড়া এলাকার শরীফ ফকির।

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের হেসাখাল গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় সোমবার রাতে ঘরের ওপর গাছ পড়লে এক পরিবারের তিনজন নিহত হন। তারা হলেন- নিজাম উদ্দিন, তার স্ত্রী শারমিন আক্তার ও চার বছরের মেয়ে নুসরাত আক্তার।

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে সোমবার রাতে গাছের ডাল ভেঙে পড়ে মারা যান মর্জিনা বেগম (৪০) নামের এক নারী।

বরগুনা সদর উপজেলার সোনাখালী এলাকায় চালে গাছ পড়লে ওই ঘরে থাকা আমেনা খাতুন নামের এক নারী মারা যান।

প্রবল ঢেউয়ে সিরাজগঞ্জে নৌকাডুবিতে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- সদর উপজেলার পূর্ব মোহনপুর গ্রামের খোকনের স্ত্রী আয়েশা খাতুন (২৮) এবং তাঁর ছেলে আরাফাত হোসেন (২)।

গাছচাপায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাঁচকাহনিয়া গ্রামের রেজাউল খাঁর স্ত্রী শারমিন বেগম (২৫) ও বাঁশবাড়ির চরপাড়া গ্রামের হান্নান তালুকদারের স্ত্রী রোমেছা বেগম (৫৮) মারা যান।

ঝড়ের সময় রান্নাঘরের ওপর গাছ পড়ে নোয়াখালীর সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা গ্রামে আইনজীবী মো. আবদুল্লাহর ১১ বছর বয়সী সন্তান সানজিদ আফ্রিদি মারা গেছে। শরীয়তপুরের জাজিরার সিডারচর এলাকায় গাছের নিচে চাপা পড়ে সাফিয়া বেগম (৬৫) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়।

কক্সবাজারের টেকনাফে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। মিয়ানমার থেকে টেকনাফ বন্দরে পণ্য নিয়ে আসা জাহাজ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়লে ডেক থেকে পড়ে শৌমিং (৭১) নামের এক বাবুর্চির মৃত্যু হয়। তিনি মিয়ানমারের নাগরিক। এছাড়া ঝড়ের সময় নিখোঁজ সোহেনা (৯) নামে এক শিশুর লাশ টেকনাফের একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।

পটুয়াখালী সদর উপজেলার প্রতাপপুর খেয়াঘাট এলাকার লোহালিয়া নদীতে ইটবোঝাই ট্রলার ডুবে নিখোঁজ হন ট্রলারের শ্রমিক নুরুল ইসলাম (৪৫)।

গাজীপুরের কাপাসিয়ার ইকুরিয়া গ্রামে ঘূর্ণিঝড়ের সময় ঘরচাপায় আনিসুর রহমান (৯) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়।

মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের কনকসার এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী আসমা বেগম (২৮) ও তার মেয়ে সুরাইয়া আক্তার (৩) বসতঘরে গাছ ভেঙে পড়লে মারা যান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় গাছ ভেঙে পড়ে জয়নাল আবেদীন (২৮) নামে এক যুবক মারা গেছেন। জেলার নবীনগরে ঘূর্ণিঝড়ে ছিঁড়ে যাওয়া তার ঠিক করতে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে পড়ে রিপন মিয়া নামে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক লাইনম্যান মারা গেছেন।

ঝালকাঠির নলছিটিতে ঝড়ের কবলে পড়ে বাবুল সিকদার (৪৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টি আর ঝড়ের মধ্যে ঢাকার হাজারীবাগে দেয়াল ধসে এক রিকশাচালকের মৃত্যু হয়েছে। ফসল ও মৎস্য সম্পদের ক্ষতি : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং কৃষকের কান্না হয়ে ঝরছে। বিশেষ করে আমন ও রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সমকালের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর অনুযায়ী অন্তত ২ লাখ হেক্টর ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. হারুন অর রশিদ বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে শীতকালীন সবজি অন্য অঞ্চলের চেয়ে এক মাস দেরিতে আবাদ হয়। শুরুতেই চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেন।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, জেলায় ৪৬৮ পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম জানান, ঘূর্ণিঝড়ে উপজেলার ১০ হেক্টর জমির ধান লুটিয়ে পড়েছে এবং ২২ হেক্টর রবিশস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নড়াইলে ঝড়ে ৪ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির রোপা আমন, গ্রীষ্ফ্ম ও শীতকালীন সবজি- কাঁচামরিচ, সরিষা, পান, কলা ও পেঁপে আক্রান্ত হয়েছে। পটুয়াখালীতে ১ হাজার ৫৫০ হেক্টর আমন এবং ৩০০ হেক্টর শাকসবজির ক্ষতি হয়েছে। খুলনার ডুমুরিয়ায় ১০০ হেক্টর জমির সবজির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফরিদপুরের নগরকান্দায় ১ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

ঝিনাইদহের হরিণাকু-ুতে ৪৮ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নওগাঁর রানীনগরে ৫৪০ হেক্টর জমির কাঁচা-পাকা ধান নুয়ে পড়েছে।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ওবায়দুর রহমান ম-ল বলেন, রংপুর জেলার কৃষিতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কোনো প্রভাব পড়েনি। পাকা আমন ধানের কিছু গাছ হেলে পড়েছে।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের প্রায় ১০০ হেক্টর ভুট্টা, ২৫ হেক্টর সরিষা, ২৫ হেক্টর ধান, ৬০ হেক্টর মাসকলাই ও ধনিয়া ৪০ হেক্টর পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া শীতকালীন সবজি সবই নষ্ট হয়েছে। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ২৯ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ভেসে গেছে ৭৫০টি ঘের ও পুকুরের মাছ। এতে প্রায় ৮৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার ৮৫০ হেক্টর রোপা আমনের জমি, ৩৭৫ হেক্টর শীতকালীন সবজি, ১৭ হেক্টর পান বরাজ, ১১০ হেক্টর কলা, ২০ হেক্টর মরিচ, ৭ হেক্টর পেঁপে ও ৬ হেক্টর বিভিন্ন শীতকালীন সবজির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা কৃষি দপ্তরের তথ্যমতে, এই উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ৩২০ কৃষকের ৩৭ হেক্টর জমির আমন ধান ও শাকসবজির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

অবকাঠামোর ক্ষতি: ঘূর্ণিঝড়ে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অবশ্য সরকারিভাবে এখনও এ বিষয়ে চূড়ান্ত তথ্য আসেনি। তবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান গতকাল জানিয়েছেন, দেশের ৪১৯ ইউনিয়নে আনুমানিক ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। খবর অনুযায়ী, দেশের ২৫ জেলায় দেড় লাখের বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু চট্টগ্রাম জেলাতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৫ হাজার ৮৫৪টি ঘরবাড়ি। আর খুলনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৬ হাজার ঘর। বরিশালে ৩ হাজার ৪১টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপকূলীয় অঞ্চলে বিভিন্ন বিতরণ সংস্থার প্রায় দুই হাজার বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। গতকাল সচিবালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের ৪ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৮০ লাখ গ্রাহক এখনও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন আছেন। তবে তিন বিতরণ কোম্পানির তথ্যমতে, ঘূর্ণিঝড়ে প্রায় ২৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

ঘরবাড়ি মেরামতে টিন ও টাকা দেবে সরকার : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেছেন, ঝড়ের সময় দেশের ৬ হাজার ৯২৫টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১০ লাখ লোক আশ্রয় নিয়েছিল। ঝড় কেটে যাওয়ার পর তারা সবাই আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে ঘর মেরামতের জন্য ঢেউটিন দেওয়া হবে। আর যাদের মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা সুদমুক্ত ঋণ পাবেন।

দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের যে হিসাব দিয়েছেন, তার সঙ্গে বেসরকারিভাবে পাওয়া মৃতের সংখ্যার পার্থক্য কয়েক গুণ। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে ডা. এনাম বলেন, সরকারিভাবে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী আমরা সংখ্যা উল্লেখ করেছি। ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য আরও আসবে। যারা মারা গেছেন, তাদের অনেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসন থেকে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে। আরও যারা বাকি আছেন, তাদের পরিবারও টাকা পাবেন। এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারিভাবে ২৫ হাজার টাকাই নির্ধারণ করা আছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More