দামুড়হুদা ও মুজিবনগরে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন পালিত

মহামারী থেকে মুক্তি ও সকলের শান্তি কামনায় গীর্জায় গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা
মাথাভাঙ্গা ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারী থেকে মুক্তি কামনায় দেশজুড়ে বর্ণিল আয়োজনে উদযাপিত হলো খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’। দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের কোটি কোটি খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে বাঙালীরাও যিশুখ্রিস্টের আদর্শ ও শিক্ষায় শান্তির পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে মহা আড়ম্বরে পালন করেন দিনটি। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা, বাঘাডাঙ্গা, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার বল্লভপুর, রতনপুর, ভবরপাড়া, জয়পুর, নাজিরাকোনা, তারানগর ও মানিকনগর গ্রামের ১৭টি গীর্জাসহ দেশের সব গির্জায় আয়োজন করা হয় বিশেষ প্রার্থনার। সাজানো হয় লাল-নীল-সবুজ রঙের উজ্জ্বল আলোতে। কেক কেটে যিশুখ্রিস্টের জন্মবার্ষিকীও পালন করেন অনেকে। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের পাশাপাশি এসব আয়োজনে অংশ নেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। করোনা মহামারী শেষে সুন্দর জীবনের প্রার্থনায় নিজেকে সমর্পণ করেন তারা।
কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ও বাঘাডাঙ্গায় খ্রিস্টান ধর্মাবলীম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন ব্যপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে। শনিবার সকালে ধর্মানুসারীরা যথাযথ ধর্মীয় আচার, আনন্দ -উৎসব ও প্রার্থনার মধ্য দিয়ে দিনটি উদযাপন করেছে। দিনটি উপলক্ষে গতপরশু রাত ১২টায় কেক কেটে আনুষ্ঠানিকতা শুরু করে। এরপর গতকাল সকালে চার্চ ও ক্যাথলিক গির্জায় মূল অনুষ্ঠান প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। দিনব্যাপী কীর্তনের পাশাপাশি ধর্মীয় গানের আসর বসবে। বড়দিন উপলক্ষে গির্জার মূল ফটকের বাইরে বসেছে মেলা। আজ থেকে গির্জা প্রাঙ্গনে খেলার মাঠে কিশোর-কিশোরী যুবক-যুবতী বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিয়ে খেলাধুলার প্রতিযোগিতা শুরু হবে। শুভ বড়দিন উপলক্ষে কার্পাসডাঙ্গা ও বাঘাডাঙ্গার মিশন পল্লীতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য পুলিশের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কার্পাসডাঙ্গা ক্যাথলিক চার্চের ফাদার লাভলু সরকার দিনটি উপলক্ষে তিনি এলাকার সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রার্থনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন আমাদের পাশে সবসময় ছিলো এবং আজও আছে। কার্পাসডাঙ্গা চার্চের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত ম-ল জানান, বড়দিন উপলক্ষে আমাদের পল্লিতে আনন্দ উৎযাপন করছে ধর্মানুসারীরা। সকাল থেকেই প্রশাসনের লোকজন ছিলো। বড়দিন উপলক্ষে তিনি সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মিশন পল্লির বিদ্যুত ম-ল জানান, বাইরে থেকে গ্রামে এসেছি বড়দিন পালন করতে। ভালো লাগছে যে সকলের সাথে বড়দিন পালন করতে পেরে। নির্মল ম-ল জানান, প্রতি বছরের মত এবারও শান্তিপূর্ণভাবে বড়দিন পালন করছি। আমাদের এখানে কোনোসময় অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি।
মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) ছিল বড় দিন। যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন। ধর্মীয় ভাব গাম্ভির্য্যরে মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করছেন মুজিবনগরের বিভিন্ন এলাকার খ্রিস্টিয় ধর্মাবলম্বীরা। শনিবার রাত ১২টায় খ্রিস্টযোগের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বড় দিনের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সকাল ৮ টায় মহান প্রভুর ভোজের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে গীর্জায় গীর্জায় প্রার্থনা। দুপুর পর্যন্ত চলে এ প্রার্থনা। তবে গেলো দু’বছর করোনা মহামারিতে বড়দিনের আনুষ্ঠানিকতা যে আনাড়ম্বর সেটা তেমন একটা ছিলো না। এবার করোনার বিধিনিষেধ না থাকায় দিনটিকে ঘিরে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে খ্রিস্টিয় ধর্মাবলম্বীরা।
খ্রিস্টিয় ধর্মাবলম্বীরা বলছেন, এবার ওমিক্রন আতঙ্কে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বড়দিন পালন করার চেষ্টা করছেন তারা। যীশুর কাছে প্রার্থনা করছেন, পুরোবিশ^ যাতে করোনা মুক্ত হয়। সব ধর্মের মানুষ পৃথীবিতে শান্তিতে বসবাস করতে পারেন। নিজেদের মধ্যে যেনো কোনো ভেদাভেদ না থাকে। এছাড়াও যারা অসুস্থ রয়েছে তারা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে যান।
মেহেরপুর মুজিবনগর বল্লভপুর মাঠ প্রাঙ্গণে বসবে সাতদিনব্যাপী মেলা। এছাড়াও রয়েছে ক্রিড়া প্রতিযোগিতা। বাগোয়ান ইউনিয়নের নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য মি. বাবুল মল্লিক বলেন, এবার মুজিবনগর উপজেলায় বল্লভপুর, রতনপুর, ভবরপাড়া, জয়পুর, নাজিরাকোনা, তারানগর ও মানিকনগর গ্রামের ১৭টি গীর্জায় গীর্জায় খ্রিস্টিয় ধর্মাবলম্বীরা প্রার্থনা করে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More