আমেরিকা প্রবাসীর অর্থে অপারেশন সম্পন্ন : অনেকেই বাড়িয়েছেন সাহায্যের হাত

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত সোনিয়ার অস্ত্রোপচারের খরচ নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটেছে

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত কিশোরী সোনিয়া খাতুনের অস্ত্রোপচারের খরচ নিয়ে অনিশ্চয়তা কেটে গেছে। গতকাল রোববার রাতে চুয়াডাঙ্গা শহরের ইউনাইটেড ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। হাসপাতালের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল রোববার ‘টাকার অভাবে অস্ত্রোপচার হয়নি সোনিয়ার, শামীমের বাড়িতে শোকের মাতম’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর অনেকেই সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। এর মধ্যে একটি শিল্প গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ওই কিশোরীর চিকিৎসার ব্যয় বহন করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে আমেরিকাপ্রবাসী এক ব্যক্তি সোনিয়ার অস্ত্রোপচারের সম্পূর্ণ খরচ দিতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন সোনিয়ার মা চম্পা খাতুন।

গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা উপজেলার হিজলগাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় সোনিয়ার স্বামী শামীম হোসেন (২২) মারা গেছেন। ওই মোটরসাইকেলে থাকা সোনিয়া গুরুতর আহত হয়েছেন। সোনিয়া হিজলগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। নিহত শামীম বেগমপুর ইউনিয়নের ফুরশেদপুর গ্রামের নওদাপাড়ার মৃত শফিউদ্দিনের ছেলে। সোনিয়া বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা শহরের ইউনাইটেড ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্বামী শামীম হোসেন মারা যাওয়ার খরবটি সোনিয়া জানেন না। চিকিৎসকের পরামর্শে তাকে স্বামীর মৃত্যুর বিষয়টি জানানো হয়নি।

আহত সোনিয়ার বাবার পরিবার ও শ্বশুরবাড়ির আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ে সোনিয়া সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হলে চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু অর্থের অভাবে পরিবারের সদস্যরা সেখানে নিতে পারেননি। বিকল্প হিসেবে চুয়াডাঙ্গার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, গত শুক্রবার রাতেই অস্ত্রোপচারের কথা থাকলেও টাকার অভাবে ওইদিন অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়নি। তবে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর সোনিয়ার অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সহায়তা পাঠাতে শুরু করেন অনেকে।

রোববার দুপুরে ওই হাসপাতালের একটি কেবিনে গিয়ে দেখা যায়, সোনিয়া শয্যায় শুয়ে আছেন। তার ডান হাত ব্যান্ডেজ করা। সেখানে কথা হয় সোনিয়ার মা চম্পা খাতুনসহ স্বজনদের সঙ্গে। চম্পা খাতুন বলেন, ‘ট্যাকার অভাবে ভাইবেলাম (ভাবছিলাম) মেয়েটুকুনির চিকিস্যা করাতি আর পারবোনানে। পেপারে খবর লিকার পর অ্যাকন অনেকেই ট্যাকা দিতি চাচ্চে। তেবে, সবার ট্যাকা আমাগের দরকার নেই। দামুড়হুদার এক লোক আমরিকায় থাকেন, সেই লোকডা সপ খরজ দিতি চাইয়েচে, এর মদ্দেই ১০ হাজার ট্যাকা দিচে।’ পাশে থাকা সোনিয়ার খালু বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমেরিকায় থাকা লোকডা অপারেশনের খরজ দিলিও তার পরিচয় বুলতি বারণ করেচে, তাই বুলতি পাইরবো না। সেই সাতে হাসপাতালের মালিকও সহযোগিতা করচে।’

ইউনাইটেড ক্লিনিকের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমেরিকাপ্রবাসী ওই ব্যক্তি তার নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে সোনিয়ার অস্ত্রোপচার বাবদ সব খরচ তিনি দিতে চান। ওই প্রবাসীর উদ্যোগকে রফিকুল স্বাগত জানিয়েছেন। সোনিয়াকে সাধারণ ওয়ার্ড থেকে কেবিনে নেয়া হয়েছে। প্রবাসীর কাছ থেকে শুধু চিকিৎসকের ফি ও ওষুধের দাম নেয়া হবে। অন্যান্য খাতের সব বিল হাসপাতালের পক্ষ থেকে বহন করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More