ঈদযাত্রার সব টিকিট শেষ : যানবাহনে বেড়েছে যাত্রীর চাপ

স্বজনদের কাছে ছুটছে মানুষ : শুরুর দিনই ট্রেনে সিডিউল বিপর্যয়
স্টাফ রিপোর্টার: ঈদ সামনে রেখে স্বজনদের কাছে ছুটছে মানুষ। এ কারণে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীচাপ বাড়ছে। গতকাল বুধবার ফেরিঘাটগুলোতে গাড়ির দীর্ঘ সারি ছিলো। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুটে ফেরি পার হতে কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। প্রায় আট মাস পর বাংলাবাজার-শিমুলিয়া রুটে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। ট্রেনের আগাম টিকিট সংগ্রহকারী যাত্রীরা এদিন যাত্রা শুরু করেন। প্রথম দিনেই ট্রেনের সিডিউলে এক থেকে তিন ঘণ্টা পর্যন্ত দেরি হয়। নৌপথে অতিরিক্ত যাত্রীবাহন ও বাড়তি ভাড়া আদায় মনিটরিংয়ে সদরঘাট, পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়ায় তিনটি মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করে নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ। এ সময় ১৮টি মামলায় চার লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পরিবহণ সংশ্লিষ্টরা জানান, আজ অফিস ছুটির পর যাত্রীচাপ আরও বাড়বে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাস, লঞ্চ ও ট্রেনের টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। বুধবার ট্রেনের টিকিট বিক্রির শেষ দিন ছিলো। এ দিন ১ মে’র অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছে। বাস ও লঞ্চের টিকিট আগেই শেষ।
সরেজমিন দেখা যায়, ২৩ এপ্রিল ট্রেনের আগাম টিকিট সংগ্রহকারীরা এদিন যাত্রা করেন। রাজধানীর কমলাপুর, বিমানবন্দরসহ সবকটি রেল স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা গেছে। ৩৭টি আন্তঃনগর এবং ২৭টি মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে যায়। কিছু ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে বিলম্বে ছেড়ে যায়। যাত্রীদের ভাষ্য, ২০ থেকে ২৫ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটেছেন। এরপর স্টেশনে এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা কিংবা ট্রেনে উঠে বসে থাকা খুবই বিরক্তের।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনসূত্রে জানা যায়, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনাগামী ৬টি ট্রেন একঘণ্টা থেকে পৌনে ৩ ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে এক কর্মকর্তা জানান, এতোদিন যারা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে পারেননি তাদের অনেকেই বিনা টিকিটে ভ্রমণ করছেন। রেলওয়ে পুলিশ কিংবা কর্তৃপক্ষ বিনা টিকিটি যাত্রীদের রোধ করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছে। ভেতরে যাত্রীর চাপ বেশি। এতো লোকের মাঝে সবার টিকিট যথাযথ দেখাও সম্ভব নয়। তাছাড়া প্রচ- ভিড়ের কারণে ট্রেনের মধ্যে চলাচল করাও যায় না। আর এ সুযোগটা নিচ্ছেন টিকিটবিহীন যাত্রীরা।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সরওয়ার জানান, কিছু ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে। একে কিছুতেই সিডিউল বিপর্যয় বলা যায় না। যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই গতি কমিয়ে ট্রেন চালানো হচ্ছে।
রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের দৌলতদিয়া প্রান্তে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়ির জট রয়েছে। এর মধ্যে দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহণ, পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান রয়েছে। প্রচ- তাপদাহের মধ্যে ভোগান্তি নিয়ে অপেক্ষা করছেন যাত্রী, চালক ও পরিবহণ শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিন বলেন, বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ১৯টি ফেরি রয়েছে। ঈদের আগে ফেরির সংখ্যা বেড়ে ২১ হবে। আশা করছি ভোগান্তি কমে যাবে।
ঈদ সামনে রেখে সদরঘাট, আরিচা ও পাটুরিয়ায় লঞ্চ, স্পিডবোট ও পণ্যবাহী নৌযানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছে নৌপরিবহণ অধিদপ্তর। সংস্থার তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ১৮টি মামলা দেন। জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের ঘাটতি থাকা, সার্ভে ও রেজিস্ট্রেশন সনদে ত্রুটি, চালকের উপযুক্ত সনদ থাকা এবং অতিরিক্ত মাল বহনের দায়ে এসব মামলা দেয়া হয়েছে। অপরদিকে আরিচা ও পাটুরিয়া মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন নৌপরিবহণ অধিদপ্তরের দুজন ম্যাজিস্ট্রেট। লঞ্চে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকায় তারা ৯টি মামলায় ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More