গাংনীর এনপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদে চাকরি ও এমপিওভুক্তির অভিযোগ

গাংনী প্রতিনিধি: ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ এবং পরবর্তীতে এমপিওভুক্ত হয়েছেন মেহেরপুরের গাংনীর এনপি (নওদাপাড়া) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম। এছাড়াও স্বেচ্ছাচারিতা ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এতো কিছুর পরও কোন অদৃশ্য শক্তির বলে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নেয়ায়; ভুক্তভোগী এলাকার মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মেহেরপুর গাংনী উপজেলার নওদাপাড়া গ্রামে ২০০০ সালের ১ জানুয়ারি এনপি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২বছরের মধ্যে বিদ্যালয়টি পাঠদানের স্বীকৃতি পায়। প্রতিষ্ঠানের জমি ক্রয়, ভবন নির্মাণ ও আসবাবপত্র নিজের টাকায় তৈরি করে দেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হাজি আব্দুল বারি বিশ^াস। অথচ প্রতিষ্ঠাতা ও তার পরিবারের লোকজন মনিরুল ইসলামের রোষানলে পড়েছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ২০০০ সালে অনিয়মিত কমিটি দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনাকালে ওই গ্রামের মৃত ওমর আলী ছেলে মনিরুল ইসলাম শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত বিদ্যালয় নয় বিধায় আইনের যথাযথ বিধি বিধান অনুসরণ করা সম্ভব হয়নি পরিচালনা কমিটির পক্ষে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মনিরুল ইসলাম বিএ পাসের ভুয়া ও জাল সনদ দিয়ে নিয়োগ গ্রহণ করেন। অথচ ওই সালে তিনি বিজ্ঞান বিভাগে এইচএসসি পাস করেন বলে জানতে পারে কমিটির লোকজন। পরবর্তীতে ২০০৭ সালে উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করেন তিনি।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওদাপাড়া গ্রামের ওই মনিরুল ইসলাম ৮ মার্চ ১৯৯৯ তারিখে কাজিপুর ডিগ্রি কলেজে সহকারী লাইব্রেরিয়ান পদে যোগদান করেন। ২০০০ সালের মে মাসে তিনি এমপিওভুক্ত হন। যার ইনডেক্স নং-৬১২৩৪৬। সরকারি বেতন ভাতাদি গ্রহণ করার মধ্যদিয়ে লাইব্রেরিয়ান পদে চাকরি করছিলেন তিনি। তবে এ পদেও তিনি ভুয়া সনদ দাখিল করেছিলেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হলে তাকে বিএ পাসের সনদ দাখিলের নির্দেশ দেন। সনদ দেখাতে ব্যর্থ হলে ২০০৭ সালের ১ এপ্রিল চাকরি থেকে মনিরুল ইসলাম চাকরিচ্যুত হন। বিষয়টি লিখিত প্রত্যয়নে নিশ্চিত করেছেন কাজিপুর ডিগ্রি কলেজ অধ্যক্ষ। বিএ পাসের সনদ না থাকায় কাজিপুর কলেজের চাকরি হারালেও এনপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বিএ পাস হিসেবে শিক্ষক পদে তিনি এমপিওভুক্ত এবং বেতন ভাতাদি নিয়ে বীরদর্পেই চাকরি করে যাচ্ছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, মনিরুল ইসলাম শিক্ষাগত যোগ্যতার ভুয়া ও জাল সনদ দাখিল এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্যদের স্বাক্ষর দিয়ে ভুয়া রেজুলেশনের মাধ্যমে শিক্ষাবোর্ডে দাখিল করেন। এছাড়াও একটি রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে কমিটিকে এড়িয়ে শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওভুক্তকরণের নামে প্রধান শিক্ষক লাখ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। বিদ্যালয়ের সকল কাগজপত্র ও রেজুলেশন নিজের কব্জায় রেখে নিজবাড়িতে কাজ সম্পাদন করেন; বিধায় কমিটির কেউ প্রতিবাদ করতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়ে মনিরুল ইসলামের মোবাইলে কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুয়া সনদে চাকরি ও এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারি টাকা গ্রহণ কিভাবে সম্ভব? এমন প্রশ্ন করলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হাবিবুল বাশার বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More