জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ জয়িতারা সংবর্ধিত

চুয়াডাঙ্গাসহ সারা দেশে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালন

স্টাফ রিপোর্টার: “নারীর জন্য বিনিয়োগ, সহিংসতা প্রতিরোধ” প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে চুয়াডাঙ্গা মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস পালন করা হয়েছে।  এ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনাসভায় সংবর্ধিত করা হয়েছে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের।

৯ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান পিপিএম (সেবা), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামীদ রেজা, পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ( দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, সদর উপজেলা  পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান সাহাজাদি মিলি, জাতীয় মহিলা সংস্থার চুয়াডাঙ্গা চেয়ারম্যান নাবিলা রুখসানা ছন্দা, জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর সন্ধানী সংস্থার নির্বাহী নূরুন্নাহার কাকলী প্রমুখ উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।  নির্বাচিত জয়িতাদের মধ্যে অনুভুতি ব্যাক্ত করে বক্তব্য রাখেন শাহানারা খাতুন ও সমাজ উন্নয়নে অসান্য অবদান রাখা নারী মোছা. মিম্মি সুলতানা।  অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরেন মহিলা অধিদফতরের চুয়াডাঙ্গা উপ পরিচালক মাকছুদা জান্নাত।  পবিত্র কোরআন থেকে তেলওয়াত করেন ক্বারী মো. কবীর হোসেন।

আলোচনাসভার সভাপতি তার বক্তব্যে এবারের প্রতিপাদ্যের যথার্ততা তুলে ধরে বলেন, নারীর জন্য বিনিয়োগ মানেই জাতির সুন্দর ভবিষ্যতগঠনের জন্য দূরদর্শি পদক্ষেপ।  কারণ, নারী শিক্ষিত মানেই মা শিক্ষিত।  যে পরিবারে মা শিক্ষিত সেই পরিবারের সন্তানরাও সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে জাতি গঠনে অবদান রাখে। মায়ের কাছে একজন সন্তান সে সন্তানই।  মেয়ে নাকি ছেলে সেটা বিবেচ্য হয় না বলেই নারী পুরুশ সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারে।  এই সুযোগ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর সামনে নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে মেলে ধরেছে।  দেশে নারীর অগ্রযাত্রা, ক্ষমতায়ন প্রত্যাশিত গতিতেই এগিয়ে যাচ্ছে।  তিনি বিজয়ের মাসে বেগম রোকেয়া দিবসে জাতির পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তার পরিবারের সকল শহীদ, জাতীয় ৪ নেতাসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সকলের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।  তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে সকল নারীকে সম্মানের আসনে রাখার উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, কাউকে পিছিয়ে রেখে নয়, সকলকে পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলেই আমরা আমাদের সমাজকে প্রত্যাশিত পর্যায়ে নিতে পারবো।

বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান পিপিএম সেবা বলেন,মহিসি নারী বেগম রোকেয়ার দেখানো পথে আমরা হাটতে পেরেছে, পারছি বলেই দেশে নারী সমাজ এগিয়েছে অনেকদূর।  নারীদের অগ্রযাত্রার মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে।  দক্ষিণ এশিয়ায় নারীর অগ্রযাত্রা ও ক্ষমতায়নে আমরা প্রথম অবস্থায় যেমন, তেমনই সারা বিশ্বে আমাদের অবস্থান ৬ষ্ঠ।  মহান স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশে নারী সমাজকে এগিয়ে নেয়ার জন্য যেসব পদক্ষেপ নিয়েছেন তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন হয়েছে এবং হচ্ছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।  এ অগ্রযাত্রা তরান্বিত করতে আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। নারীদের হতে হবে দৃঢ় প্রত্যয়ী।

আলোচনাসভা শেষে চুয়াডাঙ্গা জেলা পর্যায়ে ৫ ক্যাটাগরিতে ৫ জন নারীকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত করে সংবর্ধিত করা হয়।  তুলে দেয়া হয় সম্মাননা ক্রেস্ট ও সনদ।  এবার জেলা পর্যায়ে অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী নির্বাচিত হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার কুড়ুলগাছীর সদাবরি গ্রামের নূরুজ্জামান ও মোছা. মানজিলা খাতুনের মেয়ে মোছা. শাহানারা খাতুন।  সফল জননী নারী নির্বাচিত হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের সিনেমাহলপাড়ার ফকির মোহাম্মদ ও রিজিয়া খাতুনের মেয়ে মোছা. আম্বিয়া খাতুন।  সকল সন্তান যেমন উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত, তেমনই ছেলে সেনাবাহিনীর শীর্ষপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা। শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী নির্বাচিত হয়েছেন দামুড়হুদা ডুগডুগির শ্রী অনিল কর্মকার ও শ্রীমতি সন্ধ্যারাণীর মেয়ে কুমারী মুক্তা কর্মকার।  নির্যাতনের বিভিষিকা মুছে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা মাঝেরপাড়ার সারোয়ার হোসেন ও মোছা. হাসিনা বেগমের মেয়ে সালমা খাতুন।  সমাজ উন্নয়নে অসামন্য অবদান রেখেছে শ্রেষ্ঠ জয়িতা হয়েছেন চুয়াডাঙ্গা কেদারগঞ্জ সিএ্যান্ডবিপাড়ার মৃত ইসমাইল হোসেন ও মৃত সহিদা হোসেনের মেয়ে মোছা. মিম্মা সুলতানা।  এছাড়া চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পর্যায়ে শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী চক্ষু হাসপাতালপাড়ার বিলকিছ জাহান, সফল জননী সিনেমাহলপাড়ার মোছা. আম্বিয়া খাতুন, সমাজ উন্নয়নে কেদারগঞ্জ সিএ্যান্ডবিপাড়ার মোছা. মিম্মা সুলতানা, নির্যাতনের বিভিষিকা মুছে  নতুন উদ্যোমে জীবন শুরু করেছেন মাঝেরপাড়ার মোছা. সালমা খাতুন ও অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জন করে উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন গোরস্তানপাড়ার তানিয়া জামান।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More