নবীন-প্রবীণদের সমন্বয়ে হবে নেতা নির্বাচন : ঠাঁই হবে না কোনো রাজাকার পরিবারের

চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক টোটন জোয়ার্দ্দার

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। তিনি বলেন, অতিথি চূড়ান্ত করার পাশাপাশি চারটি উপজেলা ও একটি সাংগঠনিক ইউনিটের (দর্শনা থানা) ২১৮জন কাউন্সিলর এবং ৪০ হাজার ডেলিগেট, গণমাধ্যমের বন্ধুদের আমন্ত্রণসহ সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ১২ ডিসেম্বর ২১৮ জন কাউন্সিলর ভোটের মাধ্যমে পরবর্তী মেয়াদের নেতা নির্বাচিত হবেন। ইতিমধ্যে ৪০ হাজার ডেলিগেট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া স্বাধীনতার স্বপক্ষের সকল শ্রেণির দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারাও সম্মেলনে যোগদান করবে বলে আশা করছি। সম্মেলনের স্থান চুয়াডাঙ্গা শহরের টাউন ফুটবল মাঠে সকল প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। মাঠে প্যান্ডেলসহ দক্ষিণ কোণে নৌকার আদলে তৈরি করা হয়েছে বিশালাকার মঞ্চ।

সংবাদ সম্মেলনে রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, এই সম্মেলনে দুইটি বিষয় প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। একটি নবীন-প্রবীণদের সমন্বয়ে নেতা নির্বাচন করা এবং আরেকটি বিরোধী দলের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে স্মরণকালের সর্ববৃহত শোডাউন হবে এই ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের মধ্যদিয়ে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ বৃহত্তর দল, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে। এখানে অনেক নেতা। বিভিন্ন শ্রেণির নেতা রয়েছেন। শীর্ষ পদ বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী হতে পারে। ইতোমধ্যেই অনেকের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে নতুন কমিটিতে কোনো রাজাকার ও তার পরিবারের সদস্যদের স্থান দেয়া হবে না। সম্মেলনে কাউন্সিলরদের মতামত ও আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্য নেতাকেই চূড়ান্ত করবেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি’কে আহ্বায়ক এবং সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদকে সদস্য সচিব করে প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়াও আপ্যায়ন, শৃঙ্খলা, মঞ্চ-সাজসজ্জা, অভ্যর্থনাসহ বেশ কয়েকটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। সম্মেলনের দিনে কর্মসূচির প্রথমেই রয়েছে জাতীয় সঙ্গীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। এরপর বেলুন উড়িয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠানের শুভসূচনা। পরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের পুষ্পস্তবক অর্পণ। এরপর মঞ্চে অতিথিদের আসন গ্রহণের পর শুরু হবে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন।

সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। উপস্থিত থাকবেন খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম মিলন, পারভিন জামান কল্পনা, অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার। এরপর সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সী আলমগীর হান্নান, মুফতি মাসুদউজ্জামান বিশ্বাস লিটু, অ্যাডভোকেট শামসুজ্জোহা, দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু তালেব, উপ-প্রচার সম্পাদক শওকত আলী বিশ্বাস, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি আজিজুল হক, চুয়াডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাউদ্দিন হেলা, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের অর্থ-বিষয়ক উপ-কমিটির নির্বাহী সদস্য চুয়াডাঙ্গার কৃতিসন্তান এমএ রাজ্জাক খান রাজসহ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, বিগত সময় যারা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে হট্টগোল সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিল; তাদেরকে কোনরকম হই হট্টগোল করতে দেয়া হবে না। এজন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকবে চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের নিজস্ব নেতা-কর্মী বাহিনীর বিশাল বহর। প্রস্তুত থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। যারা নিñিদ্র নিরাপত্তায় আসন্ন জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে সফল করার জন্য সব রকম সহযোগিতা করবে। চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সবাই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সম্মেলন মঞ্চে শুধুমাত্র জেলা আওয়ামী লীগের ৭৯ সদস্য ছাড়া অন্য কোনো অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ আসন পাবেন না বা বসতে পারবেন না। সম্মেলন সফল করতে এই শৃঙ্খলা ও সহোবতটুকু সকলকে মেনে চলার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এ সম্মেলন শুধু চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়। এ সম্মেলনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে আগামী ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে তুলতে যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। এই সম্মেলনের মাধ্যমে সেই পদক্ষেপের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরো শক্তিশালী করাই হচ্ছে এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার এমপিসহ নেতৃবৃন্দ শহরের টাউন ফুটবল মাঠে সম্মেলনস্থল পরিদর্শন করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর টাউন ফুটবল মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কাউন্সিলে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুনকে সভাপতি ও আজাদুল ইসলাম আজাদকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More