মিষ্টি বিতরণ করলেন কমেলার মেয়ে মামলার বাদী নার্গিস

স্টাফ রিপোর্টার: মা কমেলা খাতুনকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় ২০০৩ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মামলাটি করেছিলেন মেয়ে নারগিস খাতুন। এরপর কেটে গেছে ১৮ বছর। আদালতে সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সোমবার রাতে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসি কার্যকর হয় দুই আসামি আজিজ ওরফে আজিজুল (৫০) ও মিন্টু ওরফে কালুর (৫০)। মায়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি দেয়ায় খুশি নারগিস। আসামিদের ফাঁসির পর মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশী ও স্বজনদের বাড়িতে মিষ্টি বিতরণ করেছেন তিনি। নার্গিস খাতুন বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর হলেও দোষীদের শাস্তি হওয়ায় আমরা খুশি। মামলার পর দীর্ঘদিন পার হয়েছে। ন্যায়বিচার পেয়ে আমরা কিছুটা স্বস্তিবোধ করছি।’
চুয়াডাঙ্গা আদালত সূত্র ও মামলার বিবরণীতে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা হাজিরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাদের ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে ওই দুই নারীর গলা কাটা হয়। সোমবার রাতে যশোর কারাগারে তাদের ফাঁসি হয়। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাত ১২টার দিকে দুই জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আলাদা অ্যাম্বুলেন্সে পুলিশের পাহারায় লাশ নিয়ে রওনা দেন স্বজনরা। রাত ৩টায় লাশ আলমডাঙ্গার রায়লক্ষ্মীপুরে পৌঁছায়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে এলাকার বাতাস। আজিজুল ও মিন্টুর জানাজা হয় গ্রামের মসজিদ চত্বরে। একসঙ্গে হয় তাদের জানাজা। আজিজুলের মামাতো ভাই ঝিনাইদহের সাধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান জানাজায় ইমামতি করেন। সকাল সাড়ে ৬টায় গ্রামের গোরস্তানে পাশাপাশি কবরে তাদের দাফন করা হয়। আজিজের স্বজনরা জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে লাশ কবরে নামানো হয়।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গার আলোচিত ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় দ-প্রাপ্ত দুই জনের ফাঁসি কার্যকরের জন্য কয়েক দিন আগে থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিই। শনিবার যশোর কারাগারে গিয়ে শেষবারের মতো স্বজনরা তাদের সঙ্গে দেখা করেন। ফাঁসির আগে আসামিদের মামলার রায় পড়ে শোনানো হয়। নিম্ন আদালতের রায়, আপিল এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমার আবেদন নামঞ্জুর হওয়ার বিষয়টি তাদের জানানো হয়। পরে তাদের যমটুপি পরিয়ে ফাঁসির মঞ্চে নেয়া হয়। সোমবার রাত পৌনে ১১টায় প্রথমে মিন্টু, এর পাঁচ মিনিট পর আজিজের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More