সরকারি বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় জেলায় ১৫৯ জনকে জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে ভেঙে পড়েছে লকডাউন ব্যবস্থা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন মানছে না মানুষ। জেলা শহরে রিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, পিকআপ, ইজিবাইক দেদারছে চলাচল করেছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে করোনার ঝুঁকি। যদিও লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় জেলার বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। গতকাল শুক্রবারের অভিযানে স্বাস্থ্যবিধি অমান্য ও বিধিনিষেধ না মেনে বাইরে বের হওয়ায় জেলায় ৭৭টি মামলায় ১৫৯ জনকে ৪০ হাজার ৪৪০ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এদিকে, গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজার, সুবদিয়া, ডিঙ্গেদহ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ সাদিকুর রহমান। এসময় স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করায় দ-বিধি ১৮৬০ এর ১৮৮ ধারায় ৭টি মামলায় ৯ জনকে ১ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে জনসাধারণের মাঝে মাস্ক বিতরণ ও গরীব চা দোকানীদের খাদ্য সহায়তা প্রদান করেন তিনি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে সহযোগিতা করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সার্টিফিকেট সহকারী সোবহান আলী ও সরোজগঞ্জ ফাঁড়ি পুলিশ।
এদিকে, কঠোর লকডাউনের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা ব্রিজে ঘুরতে আসায় এক সাথে ৬৫ জনকে ১৬ হাজার ২শ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদেরকে জরিমানা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, কঠোর লকডাউনে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চুয়াডাঙ্গার নির্মানাধীন মাথাভাঙ্গা ব্রিজে অনেকে প্রতিদিন ঘুরতে আসেন। শুক্রবার সন্ধার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে দুই পাশ দিয়ে ঘিরে ফেলে ৬৫ জনকে আটক করা হয়। পরে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৬৫ জনকে মোট ১৬ হাজার ২শ টাকা জরিমানা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক জাকির হোসেন জানান, শুক্রবার সন্ধার পর মাথাভাঙ্গা ব্রিজে বাতাস খেতে এসেছিলেন তারা। কঠোর লকডাউনের বিধিনিষেধ অমান্য করে অহেতুক ঘোরাঘুরি করায় ৬৫ জন দর্শনার্থীকে জরিমানা করা হয়েছে।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ অমান্য করা এবং স্বাস্থ্যবিধি না মানায় আলমডাঙ্গা শহরের ৩টি মামলায় ২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুমায়ন কবীর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে এ জরিমানা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানাগেছে, শহরের আলিফ উদ্দিন মোড়, চারতলার মোড়, হাউসপুর আনন্দধাম ব্রিজ, লাল ব্রিজ, কাঁচাবাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় শহরের আনন্দধামের সুরেশ স্টোরের মালিক অমিত কুমারকে ১ হাজার টাকা, ডাউকি গ্রামের আজিম শেখের ছেলে রবিউল ইসলামকে ৫০০ টাকা, কুটুম বাড়ি মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিককে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে সহযোগিতা করেন আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
এছাড়া, দামুড়হুদার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালান উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুদীপ্ত কুমার সিংহ ওই অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ১৪ টি মামলায় ১৯ জনকে ৯ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানের সময় ট্রলিতে গাড়ি থেকে অতিরিক্ত ইট বোঝায় করে পরিবহন করায় জরিমানা ও সতর্ক করা হয়। ডাক্তারের লোগো ব্যবহার করে কুষ্টিয়া পোড়াদহ থেকে মাইক্রোবাসযোগে বেড়াতে আসেন কয়েকজন। পরিচয়পত্র দেখার পর জানা যায় তারা কেউ ডাক্তার নন। এদের জরিমানা করা হয় ও ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করা হয়। ৪টি মাইক্রোবাস ও ৩টি প্রাইভেট কারের মালিককে ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকার জন্য জরিমানা করা হয়। মাস্ক না পরার জন্য ৬ জনকে জরিমানা করা হয়। এসময় কয়েকজনকে মাস্ক দেয়া হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাজে সহযোগিতা করেন পুলিশ ও বিজিবির সদস্যরা।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More