স্ত্রীর গলার রগ কেটে পালানোর সময় অভিযুক্ত স্বামী গ্রেফতার

চুয়াডাঙ্গার কালিভাণ্ডারদহ গ্রামে হত্যার উদ্দেশে ঘুমন্ত স্ত্রীর ওপর স্বামীর হামলা

স্টাফ রিপোর্টার: পারিবারিক কলহের জেরে ছুরিকাঘাতে স্ত্রীর গলার রগ কেটে পালানোর সময় অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার সকাল ৭টার দিকে চুয়াডাঙ্গার কালিভাণ্ডারদহ গ্রামে স্ত্রী দোলন অধিকারীর গলাই ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান জসিম অধিকারী। এ ঘটনার পরপরই পার্শ্ববর্তী ঝিনাইদহের মোহাম্মদপুর গ্রাম থেকে অভিযুক্ত জসিম অধিকারীকে আটক করা হয়। উদ্ধার করা হয়েছে ঘটনার সময় ব্যবহৃত ছুরি। এদিকে, মুমূর্ষু অবস্থায় দোলন অধিকারীকে (২৫) উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় জসিম অধিকারীসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন দোলন অধিকারীর বাবা সুনীল অধিকারী।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ৭-৮ বছর আগে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের সুনীল অধিকারীর মেয়ে দোলন অধিকারীর সাথে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কালিভা-ারদহ গ্রামের কানু গোসাই অধিকারীর ছেলে জসিম অধিকারীর বিয়ে হয়। তাদের সংসার আলো করে জন্ম নেয় মেয়ে রীধিমা (৪) ও মিষ্টি (১)। ভ্যানচালক জসিম অধিকারী এর আগে সেলুনের দোকানে কাজ করতেন। পারিবারিক খুটিনাটি বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্বামীর সাথে বিবাদ চলে আসছিলো দোলনের। কারনে অকারনে স্ত্রী দোলন অধিকারীকে প্রায়শই শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন জসিম। গতকাল সকালে ঘুমন্ত অবস্থায় দোলন অধিকারীকে খুন করার জন্য তার বুকের ওপর বসে ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে হত্যার চেষ্টা করলে তার সাথে ধস্তাধস্তি হয় স্বামী জসিমের। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে জসিমের হাতে থাকা ধারালো ছুরির আঘাতে স্ত্রী দোলনের গলার অর্ধেকটা কেটে যায় এবং বাম কানের নিচে কেটে গভীর ক্ষত হয়। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় দোলনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, দোলনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার গলার রগ কেটে গেছে। তার গলাই অসংখ্য সেলাই দেয়া হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা বা রাজশাহীতে পাঠানো হতে পারে। গুরুতর জখম দোলন অধিকারীর চিকিৎসা প্রদান করেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময়। দোলনের চিকিৎসা এবং শারীরিক পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. তন্ময় প্রতিবেদকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। তার অস্বাভাবিক আচরণ মানতে না পেরে উপস্থিত অনেকেই বলেছেন ‘একজন চিকিৎসকের এ কেমন ব্যবহার’?

ভুক্তভোগী দোলন অধিকারীর বাবা সুনীল অধিকারী জানান, বিয়ের পর কোনো ঝামেলা ছিলো না দোলনের সংসারে। কিন্তু জসিমের মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা কানু গোসাই দ্বিতীয় বিয়ের পর শুরু হয় পারিবারিক কলহ। কানু গোসাই ও তার স্ত্রী আশা প্রায়ই দোলনের ওপর অত্যাচার করতেন। তার বিরুদ্ধে ছেলেকে কথা লাগাতো।

চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, ঘটনার ৩ ঘণ্টা পর দুপুরে ভুক্তভোগী দোলন অধিকারীর বাবা সুনীল অধিকারী বাদী হয়ে জসিম অধিকারী, তার বাবা কানু গোসাই অধিকারী ও কানুর স্ত্রী আশা অধিকারীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযুক্ত স্বামী জসিম অধিকারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাকীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More