চুয়াডাঙ্গায় শিশুর কামড়ে সাপের মৃত্যু, ঘটনাটি নেটদুনিয়ায় ভাইরাল

স্টাফ রিপোর্টার: সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু হয়; কিন্তু শিশুর কামড়ে সাপের মৃত্যুর ঘটনা হয়তো কেউ এর আগে কখনো শোনেনি। এমনই এক আজব ঘটনা ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামে। ১৬ মাস বয়সী এক শিশুর কামড়ে একটি সাপের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঘুরপাক খাচ্ছে। রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে এই ব্যতিক্রমী ঘটনা। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার পর শিশুটিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবার। সাপটি মারা গেলেও শিশু জান্নাতুল সম্পূর্ণ সুস্থ আছে।

এলাকাসূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে গ্রামের রিয়াজুল ইসলামের শিশু কন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস প্রতিবেশী এক শিশুর সঙ্গে খেলছিলো। এ সময় তাদের একটি পুতুল খাটের ওপর থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় জান্নাতুল পুতুলটি নেয়ার জন্য খাটের নিচে চলে যায়। সে যখন বেরিয়ে আসে দেখা যায় তার হাতে একটি আধামরা সাপ। পরে জানা যায় জান্নাতুলের কামড়ে রক্তাক্ত হয়ে বাচ্চা সাপটি মারা গেছে। পরিবারের লোকজন আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে সাপসহ জান্নাতুলকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা জান্নাতুলকে তিন ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখেন। এ ব্যাপারে শিশু জান্নাতুলের মা শিলা খাতুন জানান, ‘জান্নাতুলের বয়স এখন ১৬ মাস। ও যখন খাটের নিচ থেকে বেরিয়ে আসে তখন সাপটি তার হাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় ছিল। জান্নাতুলের ক্ষতবিক্ষত কামড়ে সাপটি মারা গিয়েছে বলে আমাদের মনে হয়েছে।’

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গার পরিবেশবাদী সংগঠন পানকৌড়ির প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ড লাইফ কনজারভেশন ২০২১ পদকপ্রাপ্ত বখতিয়ার হামিদ বলেন, ‘সাপটির নাম ঘরগিন্নি। ইংরেজি নাম (ঈড়সসড়হ ডড়ৎস ঝহধশব) কমন ওয়ার্ম স্নেক। এরা ঘরের আশপাশে থাকে। সম্পূর্ণ নির্বিষ। এরা টিকটিকি খাওয়ার জন্য ঘরের চালে অথবা দেয়ালে থাকে বলে এদেরকে ঘরগিন্নি বলা হয়।

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শিশুটির শরীরে সাপের কামড়ের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তাই তাকে হাসপাতালে তিন ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রেখে পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে। শিশুটির মা সাংবাদিকদের জানান, আজ সকালে শিশুটি তার সমবয়সী চাচাতো ভাইয়ের সঙ্গে ঘরের ভেতর খেলছিল। খেলতে খেলতে তারা দুজনই একটি খাটের নিচে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর শিশুটি প্রায় এক ফুট দৈর্ঘ্যরে একটি মৃত সাপের বাচ্চা মুখে করে খাটের নিচ থেকে বেরিয়ে আসে। তিনি বলেন, তার মেয়ের শরীরে কোথাও সাপের দংশনের চিহ্ন ছিল না। তবু বিষক্রিয়ার আশঙ্কায় স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে মেয়েকে নিয়ে যান। ওই কবিরাজের পরামর্শে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান বলেন, সকাল পৌনে ১০টার দিকে স্বজনেরা শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর সাপের কামড়ের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, বিষক্রিয়ার আশঙ্কায় শিশুটিকে তিন ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। পরে দুপুরে শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More