চুয়াডাঙ্গা তালতলার স্কুলছাত্র নিখোঁজ ১৫দিনেও সন্ধান মেলেনি

গ্রেফতার ব্যক্তিদের অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় স্কুলছাত্র আবু হুরায়রা (১১) নিখোঁজের ১৫দিন পার হয়ে গেলেও তার সন্ধান মেলেনি। সন্তানের কোনো খোঁজ না পেয়ে হতাশ তার পরিবার। এদিকে আবু হুরায়রা নিখোঁজের ঘটনায় তার বাবার করা মামলায় গ্রেফতার চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সম্মান (বাংলা বিভাগ) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রঞ্জু হক ও তার ভাই মঞ্জু হককে মুক্তি এবং এজাহারভুক্ত আসামিদের অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আবু হুরায়রা গ্রেপ্তার রঞ্জু হকের কাছে প্রাইভেট পড়তো।
আবু হুরায়রা চুয়াডাঙ্গা পৌরএলাকার ৬নং ওয়ার্ডের তালতলা গোরস্তানপাড়ার কৃষক আবদুল বারেকের ছেলে ও শহরের ভি.জে সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিলো। গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে রঞ্জু হকের কাছে প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় সে। নিখোঁজের পর থেকে সহপাঠী ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে খোঁজ করে কোনো সন্ধান মেলেনি তার। পরে ২৬ জানুয়ারি আবু হুরায়রার বাবা সদর থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করলে পুলিশ রঞ্জু হক ও মঞ্জু হককে গেফতার করে। রঞ্জুসহ অন্য পাঁচজনকে হয়রানি করতেই মামলায় আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করছেন রঞ্জুর পরিবারের সদস্য ও সহপাঠীরা। রঞ্জু ও মঞ্জুর মুক্তি এবং এজাহারভুক্ত আসামিদের অব্যাহতির দাবিতে এজাহারভুক্ত আসামিদের স্বজন ও তাদের সহপাঠীরা মানববন্ধন আয়োজন করে এ দাবি জানান। মানববন্ধনে তালতলা গ্রামের বাসিন্দা ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর ফরজ আলী, গ্রেফতার রঞ্জু ও মঞ্জুর মা মহিমা বেগম, বড় বোন বৃষ্টি খাতুন, মামলার অন্য দুই আসামি গোলাম রসুলের মা সেলিনা বেগম ও তন্ময় কুমারের মা স্বপ্না রানী, রঞ্জুর সহপাঠী রুদ্র জোয়ার্দ্দার ও আবদুল্লাহ বক্তব্য দেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আবু হুরায়রা নিখোঁজের ঘটনায় তারা সবাই ব্যথিত। কিন্তু ভালোভাবে খোঁজ না করে রঞ্জু হকসহ পাঁচজনকে হয়রানি করতেই আসামি করা হয়েছে।
মামলার আসামি তন্ময়ের মা বলেন, তার ছেলে তন্ময় এইচএসসি পরীক্ষার্থী। হয়রানিমূলক মামলার কারণে ছেলেকে নিয়ে পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছে। মামলার কারণে তার ছেলের এইচএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবু হুরায়রার বড় বোন বাবলী আক্তার মুঠোফোনে বলেন, কাউকে হয়রানি করতে নয়; আবু হুরায়রা নিখোঁজের ঘটনায় যারা দায়ী, তাদেরই আসামি করা হয়েছে। তার ভাই রঞ্জুর কাছে পড়তে গিয়েই নিখোঁজ হয়েছে। প্রাইভেট পড়া সময় শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও রঞ্জুর বাড়িতে বইখাতা পড়েছিলো। অথচ এ বিষয়ে তাদের পরিবারকে কিছু জানানো হয়নি। মামলার আসামিদের নিয়ে গ্রামবাসীও সন্দেহ করছে বলে তিনি দাবি করেন।
তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, নিয়মিত মামলায় স্কুলছাত্র আবু হুরায়রার ঘটনা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। সুনির্দিষ্ট সূত্র না পাওয়ায় শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
প্রসঙ্গত: চুয়াডাঙ্গার তালতলা গোরস্তানপাড়ার আব্দুল বারেকের ছেলে ও ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আবু হুরায়রা (১১) প্রতিবেশী রঞ্জু হোসেনের বাড়িতে ১৯ জানুয়ারি বিকেলে প্রাইভেট পড়তে যায়। সন্ধ্যার পর আবু হুরায়রা বাড়ি ফিরে না আসলে খোঁজখবর শুরু করে। কোথায় খুঁজে না পেয়ে ২৫ জানুয়ারি চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে নিখোঁজ ছাত্র আবু হুরায়রা’র পিতা আব্দুল বারেক। ওই মামলায় পুলিশ আটক করে রঞ্জু ও তার ভাই মঞ্জুকে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More