দলীয় প্রতীকেই হবে ইউপি নির্বাচন : আইন সংশধোনের সুযোগ নেই

স্টাফ রিপোর্টার: আগামী ৭ এপ্রিল থেকে অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দলীয় প্রতীকেই হচ্ছে। প্রতীক পরিবর্তনের জন্য আপাতত আইন পাস করার সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও দলীয় প্রতীকেই ভোট করতে চাচ্ছে। এখনই দলীয় প্রতীক থেকে সরে আসার কথা ভাবছেন না তারা। সূত্র মতে, আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক থাকছে কি না- এ নিয়ে তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ধূ¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও পক্ষে-বিপক্ষে মতামত তুলে ধরছেন কেউ কেউ। তবে দলীয় প্রতীক তুলে দিয়ে নির্দলীয় নির্বাচন করতে যে আইন পাস করা প্রয়োজন সে সময় এখন নেই। গত বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘আইন সংশোধন করার সুযোগ নেই। দরকারও নেই। যে আইন-বিধি আছে তা যথেষ্ট।’ একই সময় নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে আইনে নির্বাচন করি, সেটি স্থানীয় সরকার বিভাগ প্রণীত। স্থানীয় সরকার বিভাগ যতক্ষণ পর্যন্ত আইন সংশোধন না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত আইনে যা আছে সে অনুযায়ী ভোট করতে হবে।’ আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা বলছেন, নির্দলীয় নির্বাচন কেবলই আলোচনা। বাস্তবে নির্বাচন দলীয়ভাবেই হয়। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোট বর্জন করার কারণে এই নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক আছে। এই অবস্থায় দলীয় প্রতীকে বিএনপিকে নির্বাচনে আনা লক্ষ্য ছিল। এই হিসাব কষে ২০১৫ সালে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিলো।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলছেন, প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলে মাঠপর্যায়ে দলের ভিত মজবুত হবে। নির্বাচনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা সাংগঠনিক ভিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইতিবাচক ফল দেয়। যার সুফল আওয়ামী লীগ পেয়েছে। তারা আরও বলছেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে গিয়ে ছোটখাটো সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের জন্য তেমন কোনো ঘটনা নয়। আর আওয়ামী লীগই দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ব্যবস্থা চালু করেছে। এখনই তুলে দেয়ার পক্ষে নয় তারা। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান বলেন, দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার আইন আওয়ামী লীগ সরকারই পাস করেছে। ছোটখাটো ঝামেলা হলেও দলীয় প্রতীকে ভোট গ্রহণ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। খুব নিকট ভবিষ্যতে দলীয় প্রতীক তুলে দেয়ার আলামত দেখছি না।
দলের একাধিক সূত্র জানায়, সম্প্রতি দলের স্থানীয় সরকারের মনোনয়ন বোর্ডে একজন সিনিয়র সদস্য আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তুলে দেয়ার পক্ষে মতামত তুলে ধরেন। সেই আলোচনায় সাড়া দেননি দলীয় সভানেত্রী ও মনোনয়ন বোর্ডের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, ‘আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তুলে দেয়া হবে- এমন কোনো সিদ্ধান্ত দলীয় ফোরামে হয়নি। চলতি মাসের শেষে কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক আছে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হতে পারে।’
সূত্র মতে, এই মুহূর্তে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হলে আইন পরিবর্তন করতে হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগ এই আইন সংশোধনীর সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। স্থানীয় সরকার বিভাগ যতক্ষণ পর্যন্ত আইন সংশোধন না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত বিদ্যমান আইনে যা আছে সে অনুযায়ী ভোট করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কোনো কাজ শুরু করেনি।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তুলে দেয়ার কোনো নির্দেশনা স্থানীয় সরকার বিভাগ পায়নি। সুতরাং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক তুলে দিতে হবে এমন কোনো কাজ বা আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More