স্কুলছাত্র হত্যায় একজনের মৃত্যুদণ্ড : দুজনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ার মিরপুরের আলোচিত দেব হত্যা মামলার রায়

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় স্কুলছাত্র দেব দত্তকে (৯) অপহরণ ও হত্যা মামলায় এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও দুই আসামিকে আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদ- দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম এ রায় দেন। মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামি হলেন সবুজ মল্লিক (২৫)। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামে। আমৃত্যু যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত দুজন হলেন হাবিবুর রহমান ওরফে হাব্বুল (৩০) ও এরশাদ আলী (২২)। একই সঙ্গে হাবিবুরকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও এরশাদকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। হাবিবুর ও এরশাদের বাড়ি মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া গ্রামে। তারা দুজন বর্তমানে পলাতক। নিহত দেব দত্ত কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার চিথলিয়া ইউনিয়নের মালিথা গ্রামের পবিত্র দত্তের ছেলে। সে চিথলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ছিলো।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ জুন সকাল সাড়ে সাতটার দিকে দেব দত্ত প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে তার পরিবার জানতে পারে, দুজন মোটরসাইকেল আরোহী রাস্তা থেকে দেবকে তুলে নিয়ে গেছে। ওইদিন বিকেলে তার বাবা স্কুলশিক্ষক পবিত্র দত্তের মুঠোফোনে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় ১১ জুন পবিত্র দত্ত বাদী হয়ে মিরপুর থানায় অপহরণ মামলা করেন। ২৬ জুন চিথলিয়া গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ির শৌচাগারের পাশে গর্ত খুঁড়ে দেব দত্তের হাত-পা বাঁধা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে মামলাটি অপহরণের পর হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়ে যায়। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল আলীম আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে গতকাল আদালত এ রায় দেন। দেব দত্তকে অপহরণের পর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হওয়া মামলার আসামি নাঈম ইসলাম (২৭) ও জোয়ার আলী (২৮) পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। রায়ে দেব দত্তের পরিবার ও স্বজনেরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। পবিত্র দত্ত জানান, রায়ে তিনি খুশি হয়েছেন। পলাতক দুই আসামিকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি আবদুল হালিম বলেন, রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। পলাতক আসামিদের দ্রুত ধরার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া হবে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More